ভূগোলের কন্সেপ্ট – ENSO – W.B.C.S. Exam.
By Dipayan Ganguly, WBCS Gr A
ENSO কথাটি ভাঙলে দাঁড়ায়- El Nino & Southern Oscillation
El Nino নামটি শোনা শোনা লাগছে, শুনেছি এটি হলে নাকি বৃষ্টিপাত হয় না। অর্থাৎ বৃষ্টিরে জিগাইলাম, “ তুমি এলে নি?” , হে কইল,“ NO ”.Continue Reading ভূগোলের কন্সেপ্ট – ENSO – W.B.C.S. Exam.
অ! তা Southern Oscillation কেন? Southern আবার Oscillation? কারণ দক্ষিণ গোলার্ধে এই Oscillation টি দেখা যায়। কিসের Oscillation? সমুদ্রের জলের তাপমাত্রার। ঘড়ির পেন্ডুলামের মতন এদিক ওদিক ছুটে বেড়ায়, অর্থাৎ জলীয় কারেন্ট আর কি।
তা সমুদ্র বললাম বৈকি, তাই বলে সব সমুদ্রেই এটি হয় নাকি? না না । শুধুমাত্র প্রশান্ত মহাসাগরেই এটি হয়। কারণ দক্ষিণ গোলার্ধে পূর্ব থেকে পশ্চিমে সবচাইতে বেশি এলাকা জুড়ে এটি আছে। আপাতত বিশ্বের মানচিত্রটি খুলে অস্ট্রেলিয়া আর দক্ষিণ আমেরিকার অংশটি ভালো করে লক্ষ্য কর।
এইবারে নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূয্যিমামার দাপটে জল বেশ গরম হয়ে যায়, বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকার মাঝামাঝি অঞ্চলে যা নিরক্ষরেখার কাছাকাছি থাকে। এইবারে দক্ষিণ আমেরিকা দিক থেকে পূর্ব এশিয়া বা অস্ট্রেলিয়ার দিকে হিমা দাসের মতন দৌড়ে আসা Trade winds বা Tropical Easterlies এই গরম জলরাশিকে ঠেলে পশ্চিমদিকে অর্থাৎ অস্ট্রেলিয়ার উত্তর পূর্ব উপকূলে পাঠিয়ে দেয়। এর ফলে অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার অঞ্চলের জলরাশি গরম হয়ে ওঠে। এর ফলে তাপমাত্রা বাড়ে→বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বাড়ে→মেঘ সৃষ্টি হয়→ এই অঞ্চলে ভালো বৃষ্টি হয়। এই অঞ্চলের বাতাস গরম হয়ে ওপরে উঠে পূর্বে পেরুর দিকে দৌড়ে যায়। কিন্তু এই বাতাস ট্রোপোস্ফিয়ারের নিচের অংশে থাকা ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে এসে কিঞ্চিৎ ঠান্ডা হয়ে যায় ও ট্যাক্স বাবদ নিজের জলীয় বাষ্পের একটি বড় অংশ দিয়ে যায়। ফলে পেরু অবধি পৌঁছতে গিয়ে এই বাতাস শুকনো হয়ে পড়ে ও পেরু-ইকুয়েডর অঞ্চলে ঠান্ডা নেমে আসে ও বৃষ্টিও হয় না।
তাহলে বোঝো, পেরু থেকে বাতাস অস্ট্রেলিয়ার দিকে এসে বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে, উপরে উঠে ঠান্ডা হয়ে আবার পেরুর দিকে ফিরে যাচ্ছে। এটিকে বলে Walker Circulation, অর্থাৎ হাঁটি হাঁটি পা পা, উপরে উঠে পূবে যা।
এটি তো গেল ফি বছর যেটি হওয়া উচিত সেটির কথা, এটি তো আর El Nino নয়। তাহলে El Nino এর সময় এমন কি ঘটে?
ধরা যাক Trade winds বা Tropical Easterlies এর শক্তি কমে গেল। তাহলে কি হবে? যে গরম জলরাশিকে ঠেলে অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলে পাঠান হচ্ছিল সেটি আর হবে না। এর ফলে সেই জলরাশি ধীরে ধীরে পেরুর দিকে চলে আসবে। এবং পেরু অঞ্চলে সমুদ্রের গভীরে থাকা ঠান্ডা জলরাশি বেগতিক দেখে পেছনের দরজা দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার দিকে পালাবে। গরম জল পেরুর দিকে আসা মানে আগের প্রক্রিয়ায় এখানে বৃষ্টি হবে এবং ঠান্ডা জল অস্ট্রেলিয়ার উত্তরে অবস্থান করে সেই জায়গাটিকে ঠান্ডা ও শুকনো খটখটে করে দেবে। এটিই হল El Nino যার দরুন ইন্দোনেশিয়া ও ভারতে বৃষ্টি হয় না।
এতো গেল Trade winds অসুস্থ হলে কি হবে তার কথা। এইবারে যদি Trade winds কে
Glucon D আর Boost খাইয়ে চাঙা করে দেওয়া হয়, তখন কি হবে? তখন প্রশান্ত মহাসাগরের সেই বিপুল গরম জলরাশিকে আরও দ্রুতবেগে ঠেলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে উত্তর অস্ট্রেলিয়ার দিকে। এর ফলে এখানে ভারী বৃষ্টি হবে। এই গরম জল ধেয়ে আসার জন্য এখানকার ঠান্ডা জল ওপরদিকে আসার সাহস না করে ডুব সাঁতরে পেরুর দিকে চলে যাবে, যেমনটা পেরু অঞ্চলের জল El Nino এর সময় করেছিল। এই ডুব সাঁতারের যে পথটি রয়েছে , এটিকে বলা হয় Thermocline। এবং El Nino এর বিপরীতধর্মী ভাইয়ের নামটি হল La Nina অর্থাৎ “ তুই লে, আর বৃষ্টি নিই না। ”
মনে রাখ —
El Nino → পেরুতে বৃষ্টি→এশিয়া শুকনো
La Nina→ এশিয়াতে বৃষ্টি→ পেরু শুকনো
Please subscribe here to get all future updates on this post/page/category/website