Some Important Concepts Of Geography – W.B.C.S. Exam.
By Dipayan Ganguly, WBCS Gr A
১) উত্তর ভারতের তুলনায় দক্ষিণ ভারতে ইদানিং চিনির কলকারখানা গড়ে উঠছে কেন?Continue Reading Some Important Concepts Of Geography – W.B.C.S. Exam.
দক্ষিণ ভারত বিষুবরেখার কাছাকাছি অঞ্চলে। এখানে উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ুর জন্য আখের রসে সুক্রোজের পরিমান বেড়ে যায়। ফলে চিনির মিষ্টতা বাড়ে (কিউবা হল চিনির বস্তা, একবার কিউবার অবস্থানটা ম্যাপে দেখে নাও)। এর জন্য ব্যাপক হারে উৎপাদন হয় এবং বাকিদের দেখাদেখি নতুনরাও এতে বিনিয়োগ করা শুরু করে। চিনির মিলগুলোও সারাবছর খোলা থাকে আখ নিংরানোর জন্য। ফলে চিনির ব্যবসায় রমরমা।
২) আমাদের দেশে মৌসুমী জলবায়ুর এত প্রভাব প্রতিপত্তি কেন?
আমাদের দেশের অবস্থান উত্তর গোলার্ধের ৮ ডিগ্রি থেকে ৩৭ ডিগ্রি পর্যন্ত। বিষুবরেখা অঞ্চলের কাছাকাছি Inter tropical convergence zone এ NE & SE trade winds এর মিলন ঘটে। এপ্রিল মে মাসে উত্তর ও মধ্য ভারতের ব্যাপক তাপপ্রবাহের ফলে এই ITCZ উত্তরমুখী হয়। এই বায়ুর মধ্যে প্রচুর পরিমানে আর্দ্রতা থাকে (মহাসাগরের) এবং যখন বায়ুমণ্ডলের ওপরের অংশে পৌঁছে (Upper air circulation) ধীরে ধীরে ঠান্ডা হতে থাকে, তখন সেই আর্দ্রতা বৃষ্টিরূপে দেখা দেয়। ভারতের তিনদিকে সাগর ও উত্তর ও উত্তর পূর্বের এবং পশ্চিমঘাটের পর্বতমালা গায়ের জোরে সেই আর্দ্রতাকে দেশের মাটিতেই ধরে রাখে। যে কারণে আমাদের দেশে মৌসুমী জলবায়ুর এত প্রভাব।
৩) থর মরুভূমি ভারতের উত্তর পশ্চিম প্রান্তে কেন?
ভারতের উত্তরে ও উত্তর পশ্চিমে হিমালয়, দক্ষিণ পশ্চিমে পশ্চিমঘাট পর্বতমালা মৌসুমী বায়ু কে ঘাড় ধরে মাটিতে নামায়- বৃষ্টি রূপে।
কিন্তু ভারতের পশ্চিম প্রান্তে কোনো পর্বতমালা নেই যা দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর ছিঁটেফােঁটা সে অঞ্চলের মাটিতে নামাবে। এর ফলে সেই প্রান্ত থাকে শুষ্ক ও অনার্দ্র। এর পরিণতিস্বরুপ থর মরুভূমির সৃষ্টি।
৪) মৌসুমী বায়ু কাকে বলে?
আমরা শুনেছি মৌসুমীর জন্য সারা দেশে নাকি কান্না, ইয়ে মানে বৃষ্টিপাত হয়। তা এই মৌসুমীটি কে, কোথা থেকে আসেন এবং কিভাবে কাঁদিয়ে বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে চলে যান, সেটি জানতে হবে।
প্রথমেই বিশ্বের মানচিত্রটি খুলে দেখে নাও। আমাদের দেশের বিস্তার উত্তর গোলার্ধে নিরক্ষরেখা ঘেঁষে প্রায় তিব্বতের কোল পর্যন্ত। দুই পাশে আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগর, অর্থাৎ বিপুল জলরাশি। মাঝে উল্টো ত্রিভুজাকৃতি আমাদের বসুন্ধরা। গরমকালে সূয্যিমামার দাপটে বসুন্ধরার মাটি ও দুই সাগরের জল তেতে ওঠে। কিন্তু বসুন্ধরা সাগরের চাইতে বেশি তাড়াতাড়ি তেতে ওঠেন, ফলে এর ওপর চাপ কমে যায়। এদিকে দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে ধেয়ে আসা দক্ষিণ-পূর্ব বায়ু উত্তর গোলার্ধে ঢুকেই ডান দিকে বেঁকে গিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম বায়ু হয়ে যায় (এর কারণ হল পৃথিবীর আবর্তন, যে কারণে Coriolis Force বলে একটি বল তৈরি হয় যা ঘাড় ধরে উত্তর গোলার্ধে বায়ুকে ডানদিকে ও দক্ষিণ গোলার্ধে বাঁদিকে বেঁকিয়ে দেয়)। এইবারে এই দক্ষিণ-পশ্চিম বায়ু বসুন্ধরার দুই ভাগে ভাগ হয়ে পাশের সাগর থেকে জল তুলে (আর্দ্রতা সংগ্রহ করে ) বসুন্ধরার একটা বড় অংশকে স্নান করিয়ে দেন। প্রথমটি আরব সাগর থেকে জল তুলে ঢোকার মুখে ১লা জুন নাগাদ পশ্চিমঘাট পর্বতের মুখোমুখি হয় এবং ট্যাক্স বাবদ প্রায় সমস্ত আর্দ্রতা সেখানে বৃষ্টিরূপে ফেলে দিতে বাধ্য হয়। এর মধ্যেও কিঞ্চিৎ ফাঁক ফোকর দিয়ে সৌরাষ্ট্র হয়ে বায়ুটি বর্ডারের কাঁটাতার পেরিয়ে উত্তর ভারতের দিকে এগোতে থাকে। কারণ হল গরমকালে গঙ্গা সমভূমির ওপর অবস্থানরত ITCZ (Inter Tropical Convergence Zone), যা কিনা দালালের মতন মৌসুমীকে বর্ডার পেরিয়ে চটজলদি চলে আসার রসদ যোগায়। তবে কিনা মৌসুমীর মধ্যে তখন সামান্যই আর্দ্রতা অবশিষ্ট থাকে, তাই এর দরুণ সেই অঞ্চলগুলিতে তেমন আহা মরি বৃষ্টি হয় না। এ ছাড়াও তিব্বত উপত্যকা গরম হয়ে উঠে নিম্নচাপ সৃষ্টি করার ফলে Tropical easterly jet streams কে আকৃষ্ট করে। এই Tropical easterly jet streams নানা জায়গার ঠোক্কর খেয়ে বঙ্গোপসাগর হয়ে নিচে নেমে আরব সাগরের মৌসুমীর সাথে জোট বাঁধে।
এইবারে আসি বঙ্গোপসাগরের থেকে জল তুলতে থাকা বায়ুর কথা। এটি উত্তর পূর্ব হিমালয়ের পাটকাই বোম পাহাড়ে বোমার আঘাতে আহত হয়ে জল ফেলতে বাধ্য হয়। এখানে যে কারণে বাম্পার বৃষ্টিপাত হয়। এর পরে এটি পশ্চিমে এগোতে থাকে। যত এগোয় তত আর্দ্রতা কমতে থাকে ও এর কারণে পশ্চিমাভিমুখে বৃষ্টিও কমতে থাকে। এটি এগোতে গিয়ে সৌরাষ্ট্র দিয়ে ঢুকে যাওয়া আরব সাগর শাখার সেই বায়ুর সাথে সাক্ষাৎ করে। এটি হতে হতে প্রায় ১৫ই জুলাই হয়ে যায়। তবে এরা দুজনে এর চাইতে উত্তরে আর যেতে পারে না। কারণ হল হিমালয়, তিনি ট্যাক্সও নেবেন না, বর্ডারও পেরোতে দেবেন না। কাজেই মৌসুমী এইদেশে কমবেশি তিন মাসের জন্য ট্যুরিস্ট ভিসায় বিচরণ করে।
এতো গেল মৌসুমীর আসা ও ঘোরার কথা। এইবারে মৌসুমী ফিরে কি করে যায়?
তিনমাসের ভিসা শেষ। উত্তর ভারতে উচ্চ চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর পাশাপাশি সূয্যিমামা দক্ষিণ দিকে বেশি তাপ দিচ্ছেন বলে ITCZ ও সুযোগ বুঝে গঙ্গা সমভূমি থেকে ভারতের দক্ষিণে সরে গেল। কাজেই বেশি চাপের জায়গা থেকে কম চাপ বিশিষ্ট ITCZ অঞ্চলে মৌসুমী চলে আসার চেষ্টা করবে। এছাড়াও গরম কম থাকার জন্য Westerly Jet streams হিমালয়ের উত্তরদিক দিয়ে না গিয়ে দক্ষিণ দিক দিয়ে যায় এবং মৌসুমীকে আরও শক্তিশালী করে দেয়। শক্তি জুটিয়ে বঙ্গোপাসাগরের ওপর দিয়ে যখন সে যায়, তখন অন্ধ্র উপকূল থেকে জল তুলে নিয়ে তামিলনাডুতে ভালোরকম বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে যায়। চেন্নাই এর বন্যা মনে আছে নিশ্চয়।
Please subscribe here to get all future updates on this post/page/category/website